সামাজিক বনসৃজন বলতে কী বোঝো?
সংজ্ঞা: সামাজিক বৃক্ষরোপণ পরিকল্পনা অনুসারে সমাজের সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে নির্ধারিত অরণ্য সীমার বাইরে বিভিন্ন ধরনের অব্যবহৃত ও পতিত জমিতে অরণ্য সৃষ্টির উদ্যোগকে সামাজিক বনসৃজন বলে।
সামাজিক বনসৃজনের প্রকৃতি: সামাজিক বনসৃজন একটি বহুমুখী উদ্দেশ্য সাধক প্রকল্প এবং এর কর্মসূচি ব্যাপক। কৃষি জমির আশে পাশে অব্যবহৃত জমিতে কৃষি বনায়নের কাজ হাতে নেওয়া, মিশ্র বনভূমি সৃষ্টির মাধ্যমে জ্বালানি কাঠ ও ফলমূল সংগ্রহ করা অথবা পশু খাদ্যের যোগান দেওয়া, আমোদ-প্রমোদের উদ্দেশ্যে বনসৃজন করা ইত্যাদি নানা জনমুখী কাজের মাধ্যমে জনগণের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি ঘটানোর উদ্দেশ্যে সামাজিক বনসৃজন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়।
নির্ধারিত স্থান: রেল লাইনের ও রাস্তার দু'পাশের ফাঁকা জমিতে, নদীর ধারে, বাড়ির পেছনে, পুকুর পাড়ে, কবরস্থানে ও শশ্মান ঘাটে, স্কুল-কলেজ এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির উন্মুক্ত চত্বরে সামাজিক বনসৃজন করা হয়।
নির্বাচিত গাছ: মহুয়া, কুসুম, বট, বাঁশ, ইউক্যালিপটাস, নারকেল, বাবুল, নিম, সুপারি ইত্যাদি হল সামাজিক বনসৃজনের জন্য নির্বাচিত উল্লেখযোগ্য গাছ।
সামাজিক বনসৃজনের গুরুত্ব
১)সামাজিক বনসৃজনের মাধ্যমে অব্যবহৃত ও পতিত জমিকে অর্থনৈতিক ভাবে সফল পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয়। ফলে জমির অর্থনৈতিক মান বৃদ্ধি পায়।
২)অতিরিক্ত বনভূমি সৃষ্টির মধ্য দিয়ে ভূমিক্ষয় জনিত সমস্যা নিবারণ করা যায়।
৩)জ্বালানি কাঠ ও পশু খাদ্যের যোগান বৃদ্ধি করা যায়।
৪)স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পায় বলে বেকারত্ব নিয়ন্ত্রিত হয়।
৫)ঝড়ঝঞ্ঝা জনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলা যায়।
৬)সামাজিক বনসৃজনের ফলে গড়ে ওঠা অরণ্যকে কেন্দ্র করে মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
৭)সামাজিক বনসৃজনের মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে পরিবেশতন্ত্রকে সুরক্ষিত করা যায়।
Please do not share any spam link in the comment box