Ads Area

গঙ্গা নদীর গতিপথ বর্ণনা করো

 গঙ্গা নদীর গতিপথ বর্ণনা করো

গঙ্গা নদীর গতিপথ বর্ণনা করো


গঙ্গা হলো ভারতের প্রধান ও পবিত্র নদী। উপনদী সহ গাঙ্গেয় অববাহিকার আয়তন প্রায় 8.6 লক্ষ বর্গ কিমি, যা ভারতের মোট আয়তনের প্রায় 26% স্থান অধিকার করে আছে।

উৎপত্তি: গঙ্গা নদী উত্তরাখণ্ড রাজ্যের অন্তর্গত কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ গুহা (7010 মিটার) থেকে লাভ করেছে।

দৈর্ঘ্য: গঙ্গা ভারতের দীর্ঘতম নদী এবং মোট দৈর্ঘ্য প্রায় 2525 কিমি।

প্রবাহ পথ: গঙ্গা নদী হলো ভারতের একটি আদর্শ নদী। কারণ এই নদীর উচ্চ, মধ্য ও নিম্ন-এই তিনটি গতিই সুস্পষ্ট ভাবে বোঝা যায়। গঙ্গা নদীর প্রবাহপথ আলোচনা করতে হলে এই তিনটি ভাগে ভাগ করে আলোচনা করতে হবে।

১) উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহ:  উত্তরাখণ্ডের কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ গুহা থেকে উৎপত্তি লাভ করে গঙ্গা নদী ভাগীরথী নাম নিয়ে গভীর গিরিখাত সৃষ্টি করে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়েছে এবং দেবপ্রয়াগের কাছে অলকানন্দার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। দেবপ্রয়াগের পর এই অলকানন্দা ও ভাগীরথী নদীর মিলিত প্রবাহ গঙ্গা নামে পরিচিত হয়েছে। এরপর গঙ্গা নদী আরো দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে হরিদ্বারের এর কাছে সমভূমিতে পড়েছে।এই গোমুখ গুহা থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত গঙ্গা নদীর উচ্চ গতি বা পার্বত্য প্রবাহ।

২)মধ্যগতি বা সমভূমি প্রবাহ: হরিদ্বার থেকে বিহারের রাজমহল পর্যন্ত গঙ্গা নদীর মধ্যগতি বা সমভূমি প্রবাহ। হরিদ্বার থেকে প্রথমে দক্ষিণ-পূর্বে এবং পরে পূর্বদিকে অসংখ্য বাঁক সৃষ্টি করে এই নদী উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গঙ্গা নদীর এই মধ্য গতিতে ডান ও বামদিক থেকে অসংখ্য উপনদী এসে মিলিত হয়েছে। যমুনা ও শোন হল গঙ্গার ডান তীরের এবং গোমতী, ঘর্ঘরা, কোশী, গণ্ডক, বুড়িগন্ডক ইত্যাদি হল গঙ্গার বামতীরের উল্লেখযোগ্য উপনদী। এদের মধ্যে যমুনা হল গঙ্গার প্রধান উপনদী, যা কুমায়ুন হিমালয়ের যমুনোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপত্তি লাভ করে এলাহাবাদের কাছে গঙ্গার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। যমুনার সঙ্গে আবার চম্বল, বেতোয়া, কেন ইত্যাদি উপনদী এসে মিলিত হয়েছে।

৩)নিম্নগতি বা ব-দ্বীপ প্রবাহ: রাজমহল পাহাড় থেকে বঙ্গোপসাগরের মোহনা পর্যন্ত গঙ্গার নিম্নগতি। বিহারের রাজমহল থেকে এই নদী দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের কাছে দুটি শাখায় বিভক্ত হয়েছে এবং একটি শাখা পদ্মা নাম নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ও অপর শাখাটি ভাগীরথী-হুগলি নাম নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। গঙ্গা নদীর এই নিম্নগতিতে অজয়, দামোদর, রূপনারায়ন ইত্যাদি উপনদী এসে মিলিত হয়েছে। এছাড়া এই গতিতে ভাগীরথী-হুগলির নদীর মাথাভাঙ্গা, জলঙ্গি ইত্যাদি শাখানদী সৃষ্টি হয়েছে।

গঙ্গা নদীর তীরবর্তী শহর: গঙ্গা নদীর তীরে ভারতের অনেকগুলি ছোট বড়ো শহর গড়ে উঠেছে।যেমন- হরিদ্বার, বারানসী, এলাহাবাদ, পাটনা, কানপুর, হাওড়া, কলকাতা (হুগলি নদী) ইত্যাদি।

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Bottom Post Ad

Ads Area