Ads Area

শিকার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর - Shikaar Descriptive Question Answer

শিকার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর PDF: প্রতিবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় Shikaar Descriptive Question Answer PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি শিকার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর PDF

শিকার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর - Shikaar Descriptive Question Answer

নিচে শিকার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। Shikaar Descriptive Question Answer PDF পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন।



শিকার - জীবনানন্দ দাশ


‘শিকার’ কবিতাটি প্রখ্যাত সাহিত্যিক জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’ এবং ‘মহাপৃথিবী’ উভয় কাব্যগ্রন্থেই রয়েছে। আলোচ্য পোস্টে জীবনানন্দ দাশের ‘শিকার’ কবিতার গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।


শিকার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর - Shikaar Descriptive Question Answer



1. “আগুন জ্বলল আবার” —প্রথমবার আগুন জ্বলার সঙ্গে দ্বিতীয়বার আগুন জ্বলার বৈপরীত্যটি তুলে ধরো।

Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘শিকার’ কবিতায় প্রথমবার আগুন জ্বালানোর বিষয়টি উল্লেখ করা হয় শীতের কাতরতায় উষ্মতা পাওয়ার জন্য। এখানে বনের শুকনো পাতা জ্বালিয়ে দেশোয়ালিদের শরীর উত্তপ্ত করার উদ্দেশ্যটিই লক্ষিত হয়। তাই তারা —


“আগুন জ্বেলেছে-

মোরগফুলের মতো লাল আগুন;


শুকনো অশ্বত্থপাতা দুমড়ে এখনও আগুন জ্বলছে তাদের;” দেশোয়ালিদের দ্বারা প্রজ্বলিত আগুনে প্রাণ বাঁচানোর প্রচেষ্টাই প্রধান, সে আগুন ধবংসের বীভৎসতাকে নির্দেশ করে না। বনভূমির স্বাভাবিক সৌন্দর্য অক্ষুণ্ণ রেখে সে আগুন জীবন বাঁচানোর উয় অনুভব দানে সক্ষম। তবে আগুনের ভয়ংকর রূপটির আভাসও কবিতার অন্তিম পর্বে দ্বিতীয়বার আগুন জ্বালানোর দৃশ্যটির মধ্য দিয়ে প্রকটিত হয়ে পড়েছে। যেখানে কিছু শিকারি প্রবৃত্তির মানুষের নৃশংসতা চরিতার্থ করতে আগুনের ভূমিকা অন্যতম। এই আগুনের লেলিহান শিখায় দগ্ধ হয় একটি নিরীহ হরিণের নিথর দেহ, সে পরিণত হয় উয় লাল মাংসে।

“আগুন জ্বলল আবার উয় লাল হরিণের মাংস তৈরি হয়ে এল।” আর সেই সুস্বাদু মাংসের স্বাদ গ্রহণে টেরিকাটা কয়েকটি শিকারি মানুষের রসনার তৃপ্তি ঘটল। তাই বলা যায়, প্রথমবার যে আগুন প্রজ্বলিত হয় তা শীতের হাত থেকে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে কিন্তু দ্বিতীয়বার প্রজ্বলিত সেই আগুন মানুষের সীমাহীন লোভের বাস্তব প্রতিমূর্তি।


2. “একটা অদ্ভুত শব্দ। / নদীর জল মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল।” – শব্দটা কীসের এবং কেন তার জন্য নদীর জল মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল হয়ে ওঠে?

Ans: সারারাত ধরে চিতাবাঘিনির আক্রমণ থেকে নিজেকে শত চেষ্টায় রক্ষা করে সুন্দর বাদামি হরিণটি প্রভাতের আলোয় নিশ্চিন্তে, নিরুপদ্রবে প্রাণের স্ফূর্তিতে নদীর জলে স্নান করতে নামে। তখনই ভয়ংকর প্রাণঘাতী একটা অদ্ভুত শব্দে বনপথের নিস্তব্ধতা ভেঙে ফেলে হরিণের জীবন কেড়ে নেয় শিকারির দল। হরিণ বুঝতেই পারেনি যে বনের জতুজানোয়ার অপেক্ষা মানুষের হিংস্রতা কম নয়। অদ্ভুত শব্দটি তাদের বন্দুকের গুলির শব্দ।

আর সেই গুলির আঘাতে সুন্দর বাদামি হরিণটির জীবনে নেমে আসে চরমতম বিপর্যয়। প্রভাতের আলো তাকে নিশ্চিন্ত জীবনে ফেরাতে পারে না, বরং সেই আলোই তাকে বধ্যভূমির দিকে ঠেলে দেয়। চিতাবাঘিনির জান্তবতাকে অতিক্রম করতে পারলেও, অরণ্যের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেলেও, জনারণ্যে তার জীবনসংশয় হয়। মানুষ জন্তু না হলেও প্রাণঘাতী শিকারি। হরিণের রক্তে নদীর জল মচকাফুলের পাপড়ির মতো রক্তিম হয়ে ওঠে। হরিণকে গুলিবিদ্ধ করে তার মাংস রান্নার জন্য আবারও আগুন জ্বলে বনের বুকে। লাল আগুন আর উয় লাল হরিণের মাংস মিলেমিশে একাকার। নীল আকাশের নীচে সকালের রোদ পড়া বিমর্ষ ঘাসের উপর শুয়ে সময় কাটানোর গল্পের আমেজ ভেঙে একদল শিকারি প্রবৃত্তির মানুষ উৎসবে মত্ত হয়ে ওঠে। সুন্দর প্রকৃতির সুন্দর জীবের অপমৃত্যু ঘটে, মাংসাশী মানুষের নাগরিক জীবনের ক্লেদ-গ্লানিতে অরণ্য থমকে দাঁড়ায়। সারা বনপথে চূড়ান্ত অবক্ষয়ের পরিণাম ঘনিয়ে আসে

 

“সিগারেটের ধোঁয়া;

টেরিকাটা কয়েকটা মানুষের মাথা;

এলোমেলো কয়েকটা বন্দুক-হিম-নিস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম।”


সভ্যতা ধ্বংসকারী একদল শিকারির জান্তব উল্লাস ও অপরিণামদর্শিতায় প্রকৃতির বুকে নামে এক ভোরের অপমৃত্যু ও এক হরিণের সকরুণ বিধিলিপি। যা কেবল নদীর জলরাশিকেই রক্তাক্ত করে না, তা সৌন্দর্য, মানবিকতা সবকিছুকে ক্ষতবিক্ষত করে দগ্ধ করে তোলে।


3. ‘শিকার’ কবিতা আসলে কবির মনোজগতের প্রতিফলন–কবিতাটি বিশ্লেষণ করে বুঝিয়ে দাও।

Ans: ‘বনলতা সেন’ কাব্যগ্রন্থের ‘শিকার’ কবিতায় স্থান এবং কাল-নির্দিষ্ট অবস্থানে কবি নিজের উপস্থিতিকে জাগ্রত করেছেন। হিংসা, বীভৎসতা নগরজীবনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে, তাই বনভূমির উদাত্ত প্রান্তরে ভোরের সোনালি মুহূর্তে হরিণের আনন্দ-উল্লাসের সঙ্গে কবির আনন্দ-উল্লাস মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। আকাশের প্রজ্বলিত তারার মতো কবিমনও আনন্দে উদ্‌বেল। জীবনের তিমির বিনাশ করে ভোরের আলোয় নিজেকে পরখ করে নিতে প্রস্তুত। ‘শিকার’ কবিতায় হরিণের মৃত্যু হল প্রেমের, আর তার সঙ্গে আস্থা-বিশ্বাসেরও অপমৃত্যু। হরিণের প্রতীকী মৃত্যু কবির সমগ্র সাকে আন্দোলিত করে। কবি ‘ক্যাম্পে’ কবিতায় বলেছেন— “বসন্তের জ্যোৎস্নায় ওই মৃত মৃগদের মতো আমরা সবাই। ” মৃগদের বুকের আতঙ্ক আমাদের সকলের। ভোরের নির্মল আকাশের তলে সবুজ বনরাজির বুকে ঘটে চলেছে অকস্মাৎ মৃত্যুর উৎসব। এসব দেখে কবিমন আতঙ্কিত। জীবনানন্দের কাব্য সমালোচক তরুণ মুখোপাধ্যায় যথার্থই বলেছেন— “প্রকৃতি জুড়ে যখন বর্ণরাগ, হরিণের রূপের ভাষায় যখন বনভূমি ঝলমল করে ওঠে, তখনই নেপথ্যচারী শিকারির গুলির আঘাত কি নিষ্ঠুর কৌতুক? মৃত্যুর উৎসব?” কবি জীবনানন্দ দাশের চেতনার অলিন্দে এই মৃত্যু উত্তীর্ণ জীবনবোধ, দ্বন্দ্ব ও বাস্তবতা নির্ণীত অভিমুখটি ‘শিকার’ কবিতার ছত্রে ছত্রে ব্যঞ্জিত হয়ে উঠেছে। হরিণের দূরস্ত জীবনসংগ্রাম, জলে অবগাহন তার বিস্তীর্ণ উল্লাসের মধ্যে প্রস্ফুটিত হয়েছে। যদিও কবিতার পরিণতি সমাজব্যবস্থার অবক্ষয়কেই প্রত্যয়িত করে। প্রখ্যাত সমালোচক অনুরাধা ঘোষের মতে, “মৃত্যুকে পরাভূত করে জীবনের জয়, এ কথা তো জীবনানন্দও বলেছেন। কিন্তু সে কোন্ জীবন? ‘জীবনের পারে থেকে যে দেখেছে মৃত্যুর ওপার তার অন্তর্জীবন তো দীপ্ত হয়ে থাকে অনন্তের বোধে, যতই সেখানে সঞ্ছিত হয়ে থাক দীর্ঘ যাত্রার ক্লিষ্টতা ও ক্লান্তি।”–এ কথা তো জীবনানন্দ দাশ সম্পর্কেই একমাত্র প্রযোজ্য।


4. নাগরিক লালসায় নীল অমলিন প্রকৃতির মাঝে পবিত্র জীবন হারিয়ে যায় হিমশীতল মৃত্যুর আঁধারে— ‘শিকার’ কবিতাসূত্রে উদ্ধৃত অংশটির নিহিতার্থ লেখো।

Ans: নগরকেন্দ্রিক জীবনচিত্র প্রকৃতির শোভা থেকে বিচ্যুত। তাই নাগরিক জীবনে প্রকৃতির লাবণ্য বিশেষ প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। ভোরের আকাশের নীলাভ রঙে যখন সমস্ত বনভূমি সেজে ওঠে তখন সেই নীলাভ আভার সবুজ বনে নাগরিক লালসা রক্তের দাগ লাগায়। তাই কবি বলেছেন—

“সৃষ্টির বুকের পরে ব্যথা লেগে রবে

শয়তানের সুন্দর কপালে


পাপের ছাপের মত সেই দিনও।” ‘শিকার’ কবিতাটিতেও সেই নাগরিক লালসার নৃশংসতায় প্রকৃতির মাঝে জীবনের অস্তিত্ব ম্রিয়মান হয়ে যাওয়ার রূপটি প্রকাশিত হয়েছে। লোভ-লালসা-ক্ষুধা-রিরংসা নিবৃত্তির নেশায় উন্মত্ত নাগরিক সভ্যতার তথাকথিত সভ্য মানুষগুলির শিকারি প্রবৃত্তির শিকার হয় বন্য প্রাণের প্রতীক হরিণ। কবিতায় সেই হরিণটির হিমশীতল মৃত্যুর আঁধারে নিমজ্জিত হওয়ার মধ্য দিয়ে নাগরিক লালসার ক্রূর রূপটি প্রকটিত হয়ে পড়ে। নতুন জীবনের খোঁজে নদীর তীক্ষ্ণ শীতল স্রোতে অবগাহন করে প্রাণের স্ফূর্তিতে মেতে ওঠা হরিণটির প্রাণ তার অজান্তেই কেড়ে নেয় নাগরিক সভ্যতার ধ্বজাধারী কিছু টেরিকাটা মানুষ। তাদের এলোমেলো বন্দুকের গুলির আঘাতে হরিণটির প্রাণস্পন্দন স্তব্ধ হয়ে যায়, সে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। যে নদীতে নেমে হরিণটি তার শরীরকে একটা আবেশ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল সেই নদীর জল তার রক্তেই ‘মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল’ হয়ে যায়। কিন্তু টেরিকাটা মানুষগুলির আশ তখনও মেটে না, তবে হরিণটি যখন ক্ষুধা নিবৃত্তির সামগ্রী রূপে উন্ন লাল মাংসে পরিণত হয় তখন তাদের সকল আকাঙ্ক্ষার পরিতৃপ্তি ঘটে।


5. “সুন্দর বাদামি হরিণ এই ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল।”—হরিণটি কী কারণে ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল? কবিতার অস্তিমে তার যে পরিণতির চিত্রটি ফুটে উঠেছে তা উল্লেখ করো। 

Ans: ‘শিকার’ কবিতার সুন্দর বাদামি রঙের হরিণটি রাতের অন্ধকারে হিংস্র চিতাবাঘিনির হাত থেকে প্রাণরক্ষার তাগিদে কখনও সুন্দরী গাছের বনে আবার কখনও অর্জুন গাছের বনের আড়ালে লুকিয়ে বেড়িয়েছে। আর তাই ভোরের আলোর আগমনে সে নবজীবন লাভ করে। মূলত, এই কারণেই সে ভোরের জন্য অপেক্ষারত ছিল।

‘শিকার’ কবিতার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটি হরিণ ও তার নৃশংস মৃত্যু। যে হরিণটি বন্য প্রকৃতিতে প্রাণের উল্লাসে মেতে উঠেছিল, কবিতার অস্তিমে সেই হরিণটিরই পরিণতি নির্মম মৃত্যু। চর্যাপদের ‘আপনা মাংসে হরিণা বৈরী’–এই কথাটির সার্থক দৃষ্টান্ত হল ‘শিকার’ কবিতার হরিণটির পরিণতি দৃশ্য। রাতের অন্ধকারে হিংস্র চিতাবাঘিনির থাবার গ্রাস থেকে সে রেহাই পেলেও ভোরের প্রকৃতির শোভা তার ট্র্যাজিক পরিণতিকে সূচিত করে। প্রকৃতির অপরিসীম লাবণ্যমাখা পরিবেশে একদল মানুষের জান্তব উল্লাসের শিকার হয় হরিণটি। আসলে শিকারি প্রবৃত্তির মানুষগুলির কাছে হরিণটি ছিল শুধু রসনা তৃপ্তির সামগ্রী মাত্র। এই শিকারি মানুষগুলির লোভ = রিরংসা ও লালসা জান্তব হিংস্রতার থেকেও হিংস্র। তাদের মারণাস্ত্র অর্থাৎ বন্দুকের গুলির আঘাতে হরিণটি তার নিজের অজান্তেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। তার শরীর নদীর স্রোতের তীক্ষ্ণ শীতলতাকে আর অনুভব করতে পারেনি। তবে নদীর জল তার শরীরের রক্তিম স্পর্শকে অনুভব করতে সক্ষম হয়েছিল। বস্তুত, জীবন্ত হরিণটি বন্য প্রকৃতির শোভা বর্ধন করলেও সে শিকারি মানুষগুলির আকাঙ্ক্ষাকে পূর্ণ করতে পারেনি। তাই মৃত হরিণটির নিথর দেহটি যখন উয় লাল মাংসে পরিণত হয় তখন শিকারি মানুষগুলির আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হয় অর্থাৎ তাদের রসনার তৃপ্তি ঘটে।


6. “মোরগফুলের মতো লাল আগুন”–কোথাকার কোন্ আগুনের কথা এখানে বলা হয়েছে? উদ্ধৃতিটির মর্মার্থ বিশ্লেষণ করো।

Ans: ‘শিকার’ কবিতাটি জীবনানন্দের আপন মনের মাধুরী মেশানো জীবন্ত এক দলিল। কোনো এক শীতের রাতে বনের মধ্যে যাদের তিনি ‘দেশোয়ালি’ বলে উল্লেখ করেছেন তারা শীতের প্রকোপ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য আগুনের তাপ নিচ্ছেন। শরীর ‘উম’ করার জন্য সেই তাপের কথাই এখানে উল্লেখ করা হয়েছে, যে আগুন মোরগফুলের মতো লাল টকটকে।

বনের দেশোয়ালিরা শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে বনের শুকনো অশ্বত্থপাতা কুড়িয়ে আগুন জ্বালায়। ‘হিমের রাতে শরীর উম্’ রাখতে জ্বলে ওঠে আগুন। সারারাত সেই আগুনের লেলিহান শিখার সঙ্গে মোরগফুলের রঙের সাযুজ্য খুঁজে পাওয়া যায়। শুকনো পাতা দুমড়ে মুচড়ে যে আগুন জ্বলে তা কামনার আগুনের প্রতিরূপ, লালসার উত্তাপের আঁচ বা দহন বলেই মনে হয়। দেশোয়ালিদের সারারাতের জ্বালা আগুনের মধ্যে কবি তাই ধ্বংসকে প্রত্যক্ষ করেছেন। কারণ, লাল আগুন বিশেষত প্রলয়ের, বিনষ্টির দ্যোতনা বহন করে নিয়ে আসে। বনভূমির নিস্তব্ধতা ভেঙে হিমের রাতে শরীর ‘উম্’ অর্থাৎ গরম করার আমেজের মধ্যেই হরিণ শিকারের প্রসঙ্গটি রয়েছে। তা ছাড়া ভোরবেলার শিশিরভেজা ঘাসের উপর সূর্যের আভার বদলে আগুন জ্বালানোর মধ্যে একটা অস্বাভাবিকতার জন্ম হয়। কবিতার তৃতীয় স্তবকে দেশোয়ালিদের শুকনো পাতায় জ্বালা আগুনের তেজ এবং উত্তাপ প্রভাতের আলোয় ম্লান হতে থাকে। যে আগুন শরীর মনের উত্তাপ বাড়ায়, কাম-ক্রোধ-লোভ -লালসার জন্ম দেয়, সেই আগুন প্রকৃতির স্বাভাবিক সৌন্দর্যময়তাকেও বিবর্ণ করে তোলে—


 “সূর্যের আলোয় তার রং কুঙ্কুমের মতো নেই আর;

 হ’য়ে গেছে রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো।”


Google News এ আমাদের ফলো করুন


Gksolves Google News


ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুকWhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Bottom Post Ad

Ads Area